Friday, December 22

ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। প্রবা ফটো


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করে সংশোধিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিঙ্গ বৈচিত্র্যের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা না থাকার জন্যই এমন দাবি জানানো হয়েছে।


বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। পরে দাবি আদায়ে উপাচার্য বরাবর দেওয়া হয় স্মারকলিপি।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো- দ্রুত ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করা; অতি দ্রুত এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; হিজড়া জনগোষ্ঠীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিঘ্নে পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া এবং ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে প্রমোট করে আইন ও সংবিধানবিরোধী কাজ করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ক্ষমা চাওয়া।


কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজড়াদের জন্য কোটা রয়েছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্যও কোটা রয়েছে। সমাজে তারাই কোটা দাবি করতে পারে, যারা সমাজে অনগ্রসর গোষ্ঠী। যারা স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে বিকৃত করে অনগ্রসর সোসাইটিতে পরিণত করে, তাদেরকে কখনোই আমরা এই সাংবিধানিক সুযোগ নিতে দেব না। ট্রান্সজেন্ডার কালচার এলজিবিটি’র অন্তর্ভুক্ত। অতএব, ট্রান্সজেন্ডারকে কোটা দেওয়া মানে এলজিবিটি কালচারকেই প্রমোট করা বা এর প্রচার প্রসারেরই নামান্তর।’


শামসুন্নাহার হলের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যই মূলত কোটা সিস্টেম। এক্ষেত্রে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের যারা আছেন তাদের জন্য এটা যুক্তিযুক্ত। তাদের দৈহিক গঠনে তাদের কোন হাত নেই, বরং সেটা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। পরিস্থিতি বিবেচনা করলেও দেখা যায়, তারা আসলেই সুবিধা বঞ্চিত এবং অনগ্রসর। কিন্তু, ট্রান্সজেন্ডার দাবিকারীদের কোটা প্রদান অযৌক্তিক। এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের নারী শিক্ষার্থীরা হুমকির সম্মুখীন হবে। কারণ, একজন ছেলে মানসিকভাবে যখন নিজেকে মেয়ে ও ট্রান্স নারী দাবি করবে তখন তাকে মেয়েদের হলে সিট দেওয়া হলে মেয়েদেরকে তাদের সঙ্গে রুম শেয়ার করতে হবে। এটা কখনোই সম্ভব নয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাওহিদা জাহান বলেন, ‘নারী ও পুরুষের বাইরে আমাদের সমাজে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের যে মানুষেরা রয়েছেন তারা এ কোটার আওতায় পরবেন। লিঙ্গ বৈচিত্র্যের নানান ধরণ থাকায় সে অনুযায়ী এই জনগোষ্ঠীর মানুষ অনেকে নিজেদের ট্রান্সজেন্ডার বলে পরিচয়ে দেন, আবার অনেকে নিজেদের হিজড়া বলে পরিচয় দেন। বাংলাদেশে সরকারিভাবে তারা হিজড়া লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। এই জনগোষ্ঠীর মানুষদের সবার নিজের পরিচয় প্রদানকে সম্মান করে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া এই নামে কোটাটি চালু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।’

কেন এই কোটা এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই জনগোষ্ঠীর মানুষ আমাদের সমাজে অনেক পিছিয়ে আছে। তাদেরকে সমাজের বোঝা মনে করা হয়। তারা যেন সমাজের বোঝা না হয় বরং সমাজে অন্য মানুষের মতো সমান অবদান রাখতে পারে তাই এই পিছিয়ে পরা মানুষদের এগিয়ে নিতেই এই কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই কোটায় যারা আবেদন করবেন তাদের শনাক্তকরণে পরিচয়পত্র দেখা হবে, যাচাই-বাছাই করা হবে। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকবেন, বিষয় বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে আবেদনকারী এই কোটার আওতায় পরেন কি-না তা বিবেচনা করা হবে।’

https://protidinerbangladesh.com/education/78913/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF

No comments:

Post a Comment