এক নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষক ও জামে মসজিদের ইমাম দ্বারা এক পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বলৎকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের দায়ে ঐ শিক্ষককে তার পদ থেকে ও ইমাম থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। সালিশের রায় নিয়ে চলছে প্রহসন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভয়ে ঐ নির্যাতিত শিশুটির পরিবার কোথাও অভিযোগ করতে পারছেন না।
ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের চাকলা পড়জিপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন চাকলা নূরানী মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মবিন। নির্যাতনের শিকার শিশু একই এলাকার চাকলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মে রাতে ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মবিন ও ওই ছেলে এক সাথে এশার নামাজ পড়ে। নামাজের পর মোটরসাইকেলযোগে তাকে নিয়ে মাওলানা তার বাড়ি নিয়ে যায় এবং ডিম-ভাত খেতে দেয়। মাওলানা আব্দুল মবিনের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা কেউ সেদিন বাড়িতে না থাকার সুযোগে ওই ছেলেকে বলৎকার করেন। এ সময় সে চিৎকার করার চেষ্টা করলে তাকে বাধা দিয়ে কাউকে না বলতে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায় এবং রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটিকে তার বাড়িতে রেখে যান। নির্যাতনের শিকার ওই শিশু কাউকে কিছু না বললেও অস্বস্তিবোধ করলে তার মা বার বার জিজ্ঞাসা করায় শেষ অবধি সব কথা খুলে বলে।
নির্যাতিত শিশুর মা জানান, আমার স্বামী ধান কাটতে গিয়েছিল। বাড়িতে না থাকায় ঘটনাটি কাউকে বলতে পারিনি। গত ১৮ মে বৃহস্পতিবার স্বামী বাড়িতে আসার পর সব কথা খুলে বললে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এ ঘটনাটি ধামা চাপা দিতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল গত ১৯ মে রাতে চাকলা দাখিল মাদ্রাসা মাঠে চাকলা নূরানী মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী রাজেকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে ওই মাওলানা নিজের অপকর্মের কথা স্বীকার করেন। সালিশে মাওলানা আব্দুল মবিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমান করা হয়। জরিমানা অর্ধেক টাকা জামে মসজিদে ও অর্ধেক টাকা নির্যাতনের পরিবারকে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় এবং টাকা দেয়ার জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়।সালিশের সভাপতি হাজী রাজেকুল ইসলাম সালিশের সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করেন।
অন্যদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাকলা নূরানী মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গত ২০ মে বিকালে এক জরুরী সভা করে মাওলানা আব্দুল মবিনকে স্থায়ীভাবে তার পদ থেকে অব্যহতি দিয়েছে। মসজিদের ইমামতির পদ থেকেও তকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে বলে মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী জানান।
নির্যাতনের শিকার শিশুর পিতা বলেন, আমরা গরীব ও অসহায় মানুষ। এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির পরামর্শে ইজ্জতের ভয়ে কোন মামলা করিনি। তবে আমি ন্যায্য বিচার পাইনি। নির্যাতিত শিশুটি ওই মাওলানার বিচার দাবী করেছে। অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন শিশু-কিশোর বলেন, ওই হুজুর আমাদের ভাল ভাল খাবার খেতে দেয় এবং পাশে বসিয়ে খুব আদর করে। আমরা ভয়ে কাউকে কিছু বলি না।
এ ঘটনায় মাওলানা আব্দুল মবিনকে সরাসরি তার বাড়ি গিয়েও পাওয়া যায়নি এবং তার ফোন বন্ধ থাকায় বার বার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ বলেন, কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
https://www.abnews24.com/country-news/231863/%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%97%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%87-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81-%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%8E%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87?fbclid=IwAR1S064tNe9MS_P5rDVg4rN_xmzTsQofcnIvW95Nz-lY6NsaDLV2tScg7YA#google_vignette
No comments:
Post a Comment