Tuesday, September 26

যাত্রাবাড়ীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় শিশু বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষককে গণপিটুনি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় দুই ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে দুই শিক্ষককে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছেন অভিভাবকরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এর আগে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটলেও তারা ভয়ে জানাতে পারেনি।

যাদের বিরুদ্ধে বলাৎকারের অভিযোগ তারা হলেন- ওই মাদরাসার আরবি শিক্ষক আবু বকর ও আল আমীন।

২৩ সেপ্টেম্বর এই ঘটনার পর ওই মাদরাসার সাড়ে ৪০০ বেশি শিক্ষার্থীকে বাড়ি নিয়ে গেছে অভিভাবকরা । 

নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রদের অভিভাবকরা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে সন্তানদের হাফেজ বানাতে যাত্রাবাড়ীর মারকাজুত তাহফিজ মাদরাসায় ভর্তি করান। কিন্তু আবাসিক এই মাদরাসায় বছরের পর বছর শিক্ষার্থী বলাৎকারের অভিযোগ ছিলো। হাতে নাতে যার প্রমাণ মেলে শুক্রবার। হেফজ শাখার আট ও দশ বছরের দুই শিক্ষার্থী বহুদিন ধরে বলাৎকারের শিকার হয়ে আসছিল। শুক্রবার তারা বাড়ি গিয়ে পরিবারে ঘটনা জানালে অভিভাবকরা এসে দুই শিক্ষক আবু বকর ও আল আমীনকে গণপিটুনি দেয়।



এদিকে মাদরাসার বাকি শিক্ষক ও কর্মকর্তারাও বলৎকারের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তবে ঠিক কত দিন ধরে এমন ঘটনা ঘটে আসছে সেই তথ্য দিতে রাজি হয়নি।

মাদরাসাটির শিশুরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকরা বলাৎকার করে আসছিলেন। তারা মাদরাসাটির চতুর্থ ও পঞ্চম তলা নিয়ে শিশুদের বলাৎকার করতেন।

ওই ছাত্র জানায় হুজুর আরও কয়েক ছাত্রকে বলাৎকার করেছেন। বেশ কয়েকটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও সে। তবে ভয় ও লজ্জায় সবাই চুপ থাকে।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকরা বিষয়টি অর্থের বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে দিচ্ছেন।

মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ নেসার আহমদ আন নাছিরী একজন ধর্মীয় বক্তা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার লাখ লাখ ফলোয়ার। তিনি নিজেও এই ঘটনায় গণপিটুনীর শিকার হয়েছেন । তার বিরুদ্ধে আট ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ রয়েছে ।

২০০৯ সালে চালু হওয়া এই মাদরাসায় এখন নারী-পুরুষ তিন শাখায় এক হাজারের বেশি আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

জানা গেছে, মাদরাসাটির খরচও ব্যয়বহুল। ভিআইপি হলে প্রতিমাসে খরচ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর সাধারণ হলে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। মাদরাসাটির আয় মাসে কয়েক কোটি টাকা ।

তবে ঘটনা জানাজানি হলে অভিভাবকরা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে বাড়ি নিয়ে গেছে । 



অভিযোগ আছে, স্থানীয় এক মহিলা কাউন্সিলারের ছত্রছায়ায় মাদরাসা মালিক নেছারী এবং কিছু অসাধু কিছু ব্যক্তির ভয়ভীতির মুখে ভুক্তভোগীরা মামলা করার সাহস পাচ্ছে না।

No comments:

Post a Comment