Wednesday, July 5

গুলিবিদ্ধ গরু ব্যবসায়ী পড়ে ছিলেন সীমান্তে, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার একজন গরু ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের সুকানি সীমান্ত এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধারের পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই গরু ব্যবসায়ীর নাম সুজন রানা (৩০)। তিনি দেবনগর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী ও দুটি ছেলে আছে।

সুজনকে কারা মেরেছে, এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে সীমান্তবর্তী ওই এলাকার বাসিন্দারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) অভিযুক্ত করছেন।

গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে সুজনের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। পরে খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া থানা-পুলিশ বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল করে থানায় নিয়ে যায়। আজ দুপুরে লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।


নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে দেবনগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আইবুল ইসলাম বলেন, সুজন রানা আগে থেকেই ভারতীয় গরুর ব্যবসা করতেন। সোমবার রাতে সুজনসহ পাঁচ-ছয়জনের একটি দল সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে গরু আনতে যায়। ফেরার পথে সুজন রানা ভারতের মদনবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যদের হাতে ধরা পড়েন। তাঁকে মারধরের একপর্যায়ে বিএসএফ সুজনকে গুলি করে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে এনে ফেলে চলে যায়। সেখানে সুজনের চিৎকারে আশপাশের জেলে ও কৃষিশ্রমিকেরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা সুজনের পরিবারকে খবর দেন। সেখান থেকে তাঁরা সুজনকে উদ্ধার করে একটি মাইক্রোবাসে রংপুরে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়া পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

সুজনের স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, ‘সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁর (সুজনের) সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। পরে কী হয়েছে, কিছুই জানি না। ভোরে মানুষের কাছে শুনেছি, তিনি গুলি খেয়েছেন।’


বিজিবি মাগুরমারী বিওপির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার দারাজ উদ্দিন বলেছেন, ‘সুজন নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন, এটা নিশ্চিত। তবে তাঁকে কে মেরেছে বা কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে, এটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাতে তিনি গুলি খেয়েছেন আর মারা গেছেন মঙ্গলবার রাতে। গুলি লাগলে এতক্ষণ একটা লোক বাঁচবে কীভাবে? এ ছাড়া তাঁর শরীরে নাকি মারধরেরও চিহ্ন আছে। তদন্তের পর সঠিক ঘটনা বলা যাবে।’


তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। সুরতহালে লাশের শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এ ছাড়া তাঁর তলপেটসহ আশপাশে একাধিক গুলির চিহ্ন আছে। তবে কার গুলিতে বা কীভাবে তিনি মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই বলা যাবে।’ নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানান তিনি।

https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/sibh3k2efl

No comments:

Post a Comment