Thursday, November 23

কটিয়াদীতে বালু উত্তোলনের মামলায় আইনজীবী গ্রেফতার

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় ভূমি সহকারীর মামলায় আলা উদ্দিন আলী নামে একজন আইনজীবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে এসআই (নিরস্ত্র) কামাল হোসেন বাদলের নেতৃত্বে কটিয়াদী মডেল থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।


গ্রেফতার ব্যক্তি আইনজীবী আলা উদ্দীন (৬০) পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামের মরহুম আছির উদ্দিনের ছেলে। পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাসান কটিয়াদী মডেল থানায় এ মামলাটি করেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভরারদিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো: রফিকুল ইসলাম সোহাগের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামারা তাসবিহা গত ১৪ নভেম্বর আনুমানিক দুপুর ১২টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় অভিযুক্ত আইনজীবী আলা উদ্দিনের নিজস্ব কৃষি ভূমি থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তখন সরেজমিনে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, আলা উদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি নিজস্ব ভূমি থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে মোটা পাইপের মাধ্যমে দূরবর্তী আরেকটি কৃষি জমিতে স্তুপ আকারে জমা করছেন। পাশের আরেকটি জমিতে ছোট্ট একটি ঘরও নির্মাণাধীন রয়েছে। অথচ চারপাশেই রয়েছে বিস্তীর্ণ তিন ফসলী কৃষি জমি। ধানসহ বেগুন, আলু, মরিচ, লেবুবাগান ও বিভিন্ন মৌসুমী শাকসবজি চাষাবাদ করা হয় এসব জমিতে। এই এলাকার মানুষজনের প্রধান আয়ের উৎসই কৃষি। আলা উদ্দিনের অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলনের কারণে কৃষিজমিগুলো হারাচ্ছে উর্বরতা, নষ্ট হচ্ছে ফসল। বালু তোলার পাইপগুলো ধানের জমির মধ্য দিয়ে আনার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষিজমি। চারপাশে কৃষিজমি অথচ মধ্যখানে খনন করার ফলে কৃষিজমিগুলো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। ফসলের উৎপাদনও কমে যাচ্ছে, মারা যাচ্ছে সবজির চারাগুলো। মামলার ভয়ে কৃষকরা আতঙ্কে ছিল এতোদিন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রফিকুল ইসলাম সোহাগ এসিল্যান্ড বরাবর লিখিত আবেদন করলে অভিযান পরিচালনা করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন প্রশাসন। তবে অভিযোগকারী ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সোহাগের নামে চাঁদাবাজির মামলা করেছে আইনজীবী আলাউদ্দিন।

এ বিষয়ে সোহাগ বলেন, তার ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কায় এসিল্যান্ড বরাবর লিখিত আবেদন করলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার ও তার আপন ভাই রাসেলের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করেছে আলা উদ্দিন। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই আইনজীবীর বিচার চান।
তিনি আরো বলেন, সাধারণ কৃষকদের মামলার ভয় দেখান আলা উদ্দিন। তার দাবি অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগ করায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো মামলাটি করা হয়েছে।

মামলার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, তারা এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেই মিথ্যা মামলা দিবেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেয়া হয়। একজন আইনের লোক হয়ে যদি বেআইনি কাজ করে তাহলে সাধারণ কৃষকরা কিভাবে বেঁচে থাকবে এমন প্রশ্নও করেন তারা।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র শওকত উসমান শুক্কুর আলী বলেন, সোহাগ একজন সাধারণ কৃষক। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই কৃষক সোহাগের নামে মিথ্যা মামলা করেছে আইনজীবী আলা উদ্দিন। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারও প্রত্যাশা করেন তিনি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামারা তাসবিহা বলেন, কৃষকের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। বালু উত্তোলনের বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। আইনানুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পরবর্তীতে আবারো এ অপরাধ করলে পুনরায় অভিযান চালানো হবে।

কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শাহাদত হোসেন বলেন, মামলার আসামিকে আমরা গ্রেফতার করেছি। আইনগত সকল কার্যক্রম শেষে আদালতে আমরা আসামিকে পাাঠাব।
https://www.dailynayadiganta.com/dhaka/793440/%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%81-%E0%A6%89%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0?fbclid=IwAR0XcVblaRvO9F1Qua_OAr0eSu_3noqrpvoXyUhyj5oQEtn79QbCcHORRrU#google_vignette

No comments:

Post a Comment