পরীক্ষা কেন্দ্রে অনিয়মের খবর প্রকাশ করায়, সময় সংবাদের বরগুনা প্রতিনিধি সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম মিরাজকে মারধর ও মামলার হুমকি দেয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের হিসাবরক্ষক এনামুল হক। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। এদিকে, পরীক্ষা কেন্দ্রে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের একদিন পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম মিরাজ।
সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে অস্বচ্ছতা এবং অনিয়ম নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সময় টেলিভিশনে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়। ওই সংবাদের জেরে কলেজের হিসাবরক্ষক এনামুল হক সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম মিরাজকে মারধরসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করার হুমকি দেন।
এসব ঘটনার প্রতিকার চাওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সাংবাদিক মিরাজ বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
মিরাজ জানান, গত বুধবার (১৪ জুন) বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে সংবাদ সংগ্রহে যান তিনি। এ সময় পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের পরিবর্তে হল পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করতে দেখেন কলেজের হিসাবরক্ষক এনামুল হক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক শিমুলী আক্তারকে। তাদের সামনেই নকল করে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন পরীক্ষার্থীরা। এসব দেখেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেননি তারা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরও বলেন, পাবলিক পরীক্ষার আইন লংঘন করে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছাড়াই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেন কলেজের কর্মচারী এনামুল হক ও শিমুলী আক্তার। রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছাড়াই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা সময় সংবাদকে জানান খোদ পরীক্ষার্থীরা।
তবে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এনামুল হক এবং শিমুলী আক্তার। আর কলেজের কর্মচারী হয়েও হল পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করার বিষয়েও স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি তারা। পরে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হলে মিরাজকে অনবরত হুমকি দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন এনামুল হক।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আলী আহম্মেদ বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হামলা, মারধর ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের হুমকি এবং ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টার প্রতিকার চেয়ে বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম মিরাজ। ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।
এ বিষেয়ে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হোসেন বলেন, বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে অনিয়মের একটি সংবাদ সময় টেলিভিশনে দেখেছি। সংবাদের পুরো বিষয় যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে তা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ ঘটনা। পরীক্ষার হলে কোনোভাবেই এ ধরনের অন্যায় এবং অপকর্ম মেনে নেয়ার মত নয়। ঘটনাটি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। শিগগিরই এ ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
https://www.somoynews.tv/news/2023-06-17/IsxSAVV7
No comments:
Post a Comment