Wednesday, October 25

https://www.shomoyeralo.com/details.php?id=241786

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলা ১১টার রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে তাকে আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। পরে একই থানার নাশকতার একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমানকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। আইনসম্মত কোনো কারণ ছাড়াই শুধু রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে গুরুতর অসুস্থ  মতিউর গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। জামায়াতের পাশাাপশি বিএনপিপন্থি আইনজীবী নেতারাও মতিউর রহমনের দ্রুত মুক্তি দাবি করেন।

নাশকতার মামলায় গ্রেফতার, কারাগারে আইনজীবী মতিউর

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাশকতার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিকে উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই শাহীদুল ইসলাম। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম তাকে কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন। এর আগে এদিন বেলা ১১টার রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে দিকে তাকে আটক করে পুলিশ।

মামলার এজহারে অভিযোগ করা হয়, ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর উত্তরা পশ্চিম থানার ৭নং সেক্টরস্থ বিএনএস টাওয়ারের সামনে জামায়াত-শিবিরের বেশ কিছু নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে মতিউর রহমান আকন্দসহ জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা ২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মুক্তি চাইলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা

আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দের মুক্তি চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থি আইনজীবী নেতারা। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তার মুক্তি দাবি করা হয়। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত ল’ ইয়ার ফ্রন্ট্রের একজন সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দকে তার বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি অসুস্থ, আমরা তার মুক্তি চাই।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী মুহসিন রশিদ বলেন, জামিন নিতে সুপ্রিম কোর্টে এলে এবং আইনজীবীদের চেম্বার থেকে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার অলিখিত কনভেনশন রয়েছে। মতিউর রহমান আকন্দকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের পক্ষ থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও পুলিশ কমিশনারের প্রতি আহ্বান জানানোর কথা বলেন।

গ্রেফতারে নিন্দা ও প্রতিবাদ জামায়াতের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘মতিউর রহমান গত ২১ অক্টোবর শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গত কয়েক বছর পূর্বে তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছে। তিনি গত কয়েক দিন ধরে শারীরিকভাবে মারাত্মক অসুস্থতায় ভুগছেন। এমন অবস্থায় পুলিশ গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকেই তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। বুধবার ডাক্তার দেখানোর জন্য তার হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশে তিনি যখন বাসা থেকে নিচে নেমে আসেন, তখন আগে থেকেই বাসার নিচে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা তাকে তাদের সাথে যেতে বলে। অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে যাওয়া জরুরি বললে, পুলিশের দায়িত্বরত সদস্যরাই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবেন বলে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে নিয়ে আসেন। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে হাসপাতালে না নিয়ে সরাসরি কোর্টে নিয়ে গিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার একটি পুরাতন মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে (মামলা নং ২০(১০)২২) গ্রেফতার দেখায়।
প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলেন, ‘ইতোপূর্বে তার নামে কোনো মামলায় ওয়ারেন্ট ছিল না। অসুস্থ্ একজন হার্টের রোগীকে এভাবে বাড়ি থেকে পুলিশের হেফাজতে তুলে নিয়ে গ্রেফতার করার ঘটনা সম্পূর্ণ বেআইনী, অন্যায়, অনভিপ্রেত ও অমানবিক। পুলিশের হেফাজতে নেয়ায় তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।’

এদিকে, অ্যাডভোকেট মতিউরের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে রাজধানীর মুগদায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে নেতাকর্মীরা। তারা মতিউর রহমান আকন্দসহ সব রাজবন্দি আলেম-ওলামাদের মুক্তি ও  ছাত্রশিবিরের ৭ দফা মেনে নেওয়ার দাবি জানান।
https://www.shomoyeralo.com/details.php?id=241786

No comments:

Post a Comment