Saturday, October 28

সাংবাদিকদের মারধর ও হেনস্তা করল সূত্রাপুর থানা পুলিশ

রাজধানীর কবি নজরুল কলেজে বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিনিধি আতিক হাসান শুভ ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি যায়েদ হোসেন মিশুকে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে সূত্রাপুর থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর সদরঘাটের লালকুঠি ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেন, ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লঞ্চযাত্রীদের মোবাইল ফোন ও ব্যাগ চেক করছিল পুলিশ। এসময় ছবি তোলায় তাদের ফোন কেড়ে নিয়ে কোর্টে চালান করে দেওয়ার হুমকি দেন পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান তারা।


সেখানে সূত্রাপুর থানার ওসি মইনুল ইসলামের সামনেই বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিনিধি আতিক হাসান শুভকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন এক পুলিশ সদস্য। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন তারা। এরপর মোবাইল ফোন থেকে তল্লাশির ছবি ডিলিট করে প্রায় ২০ মিনিট ওই দুই সাংবাদিককে আটকে রেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সাংবাদিক আতিক হাসান শুভ জানান, লঞ্চ থেকে নামা যাত্রীদের গণহারে তল্লাশি করছিল পুলিশ। এসময় সন্দেহভাজনদের ফোনও চেক করা হচ্ছিল। আমি তার ছবি তোলায় আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। আমি তাদের গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও একজন পুলিশ সদস্য আমাকে ধাক্কা দিয়ে আমার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেয়। পরে আমাকে টেনে লালকুঠি সংলগ্ন পুলিশের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সূত্রাপুর থানার ওসি চেয়ারে বসে বসে সন্দেহভাজন সবার ফোন চেক করছিলেন। আমি ওসিকেও গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় দিই এবং আমার ভিজিটিং কার্ড দেখাই। তখন পুলিশের আরেকজন সদস্য আমাকে পেছন থেকে চড়-থাপ্পড় দেন। এ ঘটনার পর আমি বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাদের প্রায় ২০ মিনিটের মতো ওই কক্ষে আটকে রাখে।

আরেক সাংবাদিক যায়েদ হোসেন মিশু বলেন, পুলিশ লঞ্চে আসা যাত্রীদের চেক করছিল। আমরা ঘটনাটি জানার জন্য যাই, কিছু ছবি তুলি। ছবি তুলতে দেখে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমাদের ফোন কেড়ে নিয়ে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে ওসির সামনে একজন পুলিশ সদস্য শুভর গায়ে হাত তোলে। আমি বিষয়টি দেখে অবাক। গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের সাথে এমন ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ।

সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম বলেন, 'এ ঘটনার সময় আমি ভেতরের রুমে ছিলাম। দুটি ছেলে এসে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই ছবি তুলছিল। তখন পুলিশ তাদের ধাক্কা দিয়ে বিআইডব্লিউটিএর একটা রুমে নিয়ে আসে। যখন শুনলাম তারা কবি নজরুলের, তখন আমি বললাম— ভুল বোঝাবুঝির কারণে এটা হতে পারে। যেহেতেু তোমাকে আমি চিনি না, তুমি আমাকে চেনো না।’

তিনি দাবি করেন, ‘একজন অপরিচিত কেউ যদি আমাদের ছবি তোলে, তাকে তো আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারি।’

ভিজিটিং কার্ড প্রদর্শনের পরও এমন আচরণ করার কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এটাতো গণপিটুনিও হতে পারত। পরিচয় জানার পর আমি হ্যান্ডশেক করে চায়ের দাওয়াত দিয়ে বিদায় দিই।’

অভিযোগের জবাবে ওসি বলেন, ‘তাদের গায়ে হাত তোলা হয়নি। শুধু ধাক্কা দিয়ে আনা হয়েছে, এ সময় হালকা টানাহেঁচড়া হয়েছে।’

তবে আতিক হাসান শুভ বলেন, ‘আমাকে উনার (ওসি) সামনেই চর-থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে।’

পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার জিয়াউল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।




https://www.deshrupantor.com/463200/sutrapur-thana-police-beat-and-harassed-journalist?fbclid=IwAR3W5eiOYPGaXtZ2HZif4bYVqZ9md5_t4p_h2DGi9JFsizc9BeGs_jlITkU

No comments:

Post a Comment