আজ মঙ্গলবার ভোররাতের দিকে বণিক বাড়ির শিতলা মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছেছবি: প্রথম আলো
শরীয়তপুর শহরের একটি বাড়ির মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার ভোররাতের দিকে শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিরালা আবাসিক এলাকার বণিক বাড়ির শিতলা মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন ওই বাড়ির লোকজন।
পালং মডেল থানা-পুলিশ ও বণিক বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বণিক বাড়ির অবস্থান জেলা কেন্দ্রীয় মন্দির পালং হরিসভার পাশের হিন্দু-অধ্যুষিত নিরালা আবাসিক এলাকায়। বণিক বাড়িতে পারিবারিক শিতলা মন্দিরে নিয়মিত পূজা-অর্চনা করা হয়। আজ সকালে ওই বাড়ির এক নারী পূজা দিতে মন্দিরের ভেতর ঢুকে দেখেন, একটি প্রতিমা ভাঙচুর করে ফেলে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া মন্দিরের অন্যান্য তৈজসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল।
পরে বাড়ির লোকজন বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানায়। পরে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন, শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীরসহ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বণিক বাড়ির বাসিন্দা রতন বণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে আমার মা মন্দিরে পূজা দেন। আজ সকাল ছয়টার দিকে মা মন্দিরে গিয়ে দেখেন, প্রতিমা বেদি থেকে নিচে পড়ে আছে। মন্দিরের জিনিসপত্রও তছনছ করা অবস্থায় পড়ে ছিল। ওই সময় মন্দিরের ভেতরে একটি মোমবাতি জ্বলছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভোররাতের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি নিয়ে আমরা আতঙ্কে আছি। আমাদের বাড়িতে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি।’
ADVERTISEMENT
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের শরীয়তপুর জেলা কমিটির সভাপতি শংকর প্রসাদ চৌধুরী বলেন, তিন-চার মাস আগে জেলা কেন্দ্রীয় মন্দির পালং হরিসভার দানবাক্স ভেঙে টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। সম্প্রতি কোটাপাড়া পৌর শ্মশান থেকে লোহা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া গত এক বছরে বিলাশখান কালীমন্দিরে তিন দফা চুরি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সব কটি ঘটনা শহরের। কোনো ঘটনারই সঠিক তদন্ত হয়নি। এবার হিন্দু জনবসতিপূর্ণ একটি এলাকায় পারিবারিক মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।
জানতে চাইলে ইউএনও জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্যে তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে কারা জড়িত, তা অল্প সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করা হবে। এ ছাড়া গত এক বছরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে।
https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/m3rylzhhb9
No comments:
Post a Comment