Sunday, March 19

আদালতে নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন ৩ নারী, তিন পুলিশ প্রত্যাহার



আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারকের কাছে ঘটনার দিন রাতের বর্ণনা দিয়ে তিন পুলিশের বিচার চেয়েছেন তিন নারী। এরপর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুরুল আমিন পুলিশ সুপারকে (এসপি) মামলা নেওয়ার আদেশ দেন। বিচারকের নির্দেশে গত শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে মামলা করলে বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার ওই তিন পুলিশকে প্রত্যাহার করে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।


ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ দেহেরগতি গ্রামের মাহিনুর বেগমের বাড়িতে। সেখানে পারিবারিক পিকনিকে উচ্চশব্দে গান বাজানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডার জেরে ওই বাড়ির তিন শিশু ও তিন নারীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ওই তিন পুলিশের বিরুদ্ধে।


এই ঘটনায় আহতরা হলেন- পিকনিকের আয়োজনকারী হেমায়েত মোল্লার স্ত্রী আকাশী বেগম, রাশিদা বেগম ও তার মেয়ে মালা বেগম, মারুফ হোসেন, মো. হাসিব ও সাব্বির।


প্রত্যাহার হওয়া তিন পুলিশ হলেন- বাবুগঞ্জ থানার এসআই খলিলুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন ও কনস্টেবল নীপা রাণী।

আহত মারুফ, নাসির ও সাব্বির জানান, গত ৩ মার্চ রাতে ওই বাড়িতে পারিবারিক পিকনিকের আয়োজন করা হয়। এ কারণে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে গানবাজনা করা হয়। কিন্তু গ্রামের কিছু লোক গানবাজনা বন্ধ করার জন্য টহল পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর টহল পুলিশ ওই বাড়িতে প্রবেশ করে উচ্চস্বরে গান বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তখন পরিবারের সকলে তাদের বোঝান, অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছেলেমেয়েরা আনন্দ করছে। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন ওই তিন পুলিশ। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হলে ছয় জনকে আটক করে থানায় নিয়ে নির্যাতন করেন। সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হন আকাশী, রাশিদা ও মালা।


তারা আরও জানান, এ ঘটনায় উল্টো এসআই নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় ৪ মার্চ আদালতে সোপর্দ করা হলে তাদের তিন জনের বয়স ১৪ বছর হওয়ায় বিচারক জামিন দেন। আর ওই তিন নারীকে কারাগারে পাঠান। ১২ মার্চ তাদেরকে আদালতে উঠানো হলে তারা বিচারকের কাছে পুলিশের করা নির্যাতনের বর্ণনা দেন। ঘটনা শোনার পর বিচারক পুলিশ সুপারকে মামলা নেওয়ার আদেশ দেন এবং তাদেরকে জামিন দেন।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে তিনি (ওসি) বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ওই তিন পুলিশকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই দিনই তিন পুলিশকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

No comments:

Post a Comment