ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারগ্রাজুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা ও শব্দ বাতিল পাশাপাশি নতুন শিক্ষা কারিকুলামে অসংগতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চুয়াডাঙ্গা ভলান্টিয়ার্স।
তাদের দাবি, ট্রান্সজেন্ডার কোটা দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলজিবিটিকিউ আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছে। পাশাপাশি নতুন শিক্ষা কারিকুলামে এসব বিষয় সুক্ষভাবে নিয়ে আসা হচ্ছে যেটা ব্যাপকতা ভয়াবহ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডারবিরোধী লেখা সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বিলুপ্তির জন্য বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
চুয়াডাঙ্গা ভলান্টিয়ার্স এর প্রধান সমন্বয়ক আসলাম হোসেন বলেন, হিজরা সম্প্রদায় এবং ট্রান্সজেন্ডার এক নয়। কিন্তু হিজরা সম্প্রদায়ের সহমর্মিতাকে কাজে লাগিয়ে বিকৃত মস্তিষ্কের ট্রান্সদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতদিন ট্রান্সজেন্ডার কোটা ছিল না হুট করে কেন ঢাবি প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিল জানতে চান! তিনি বলেন, একমাত্র কোটা তারাই দাবি করতে পারে যারা সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতি। কিন্তু কি যুক্তির উপরে কোন ধরণের শারীরিক সীমাবদ্ধতা ছাড়া ট্রান্সজেন্ডার কোটা চালু করা হয়েছে তা বোধগম্য নয়। ট্রান্সজেন্ডারদেরকে কোটা দেওয়ার অর্থ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে এলজিবিটিকে সমর্থন দেওয়া। পাশাপাশি শিক্ষা কারিকুলামের খুব সুক্ষ ভাবে এ বিষয় গুলো আনা হচ্ছে, সেটা শিক্ষার্থী মেনে নিবে না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আসিফ আসমত বলেন, ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ সমাজে সমকামিতা প্রসারে ভূমিকা রাখবে। সমকামী ব্যক্তিরা নিজেদেরকে বিপরীত লিঙ্গের মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে সমলিঙ্গের মানুষের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবে। নারীরা নিজেদেরকে পুরুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে পুরুষের সমান উত্তরাধিকার মালিকানা দাবি করে বসতে পারে। সর্বোপরি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার নিজেই বলেছেন কেবল হিজড়াদের এই কোটায় ভর্তি নেওয়া হবে। তাহলে কোটার নাম 'ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া' কেন? এছাড়া, ৯০% মুসলিমদের ভূখণ্ডের পাঠ্যপুস্তকে কেন ট্রান্সজেন্ডারের মত ভ্রান্ত ও সমাজবিধ্বংসী মতবাদ প্রচার করা হচ্ছে?
ফাস্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রিয়াংকা বিশ্বাস বলেন, হিজরাদের কোটা থাকা যুক্তিযুক্ত কিন্তু ট্রান্সদের কোটা দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই৷ নিজেদের বিকৃত করে কোটার দাবিদার হওয়া যায় না। ট্রান্স নাম করে পুরুষরূপী মহিলাদের কারণে আমরা মেয়েরা নিজেরাই ভুক্তভোগী হবো। সে কোন আবাসিক হলে থাকবে। তাঁর সাথে রুম শেয়ার করতে হবে। যা একজন সুস্থ স্বাভাবিক মেয়ের পক্ষে কোনভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।
তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে একজন ট্রান্সমানুষ কখনোই তার শরীরের শতভাগ পরিবর্তন করতে সক্ষম নয়। সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ তারা পরিবর্তন করতে পারে। বাকি ৮০ শতাংশই তাদের অপরিবর্তিত থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টা থেকে যায়।
চুয়াডাঙ্গা ডিবেট ক্লাব এর সদস্য রনি বিশ্বাস বলেন, ট্রান্সজেন্ডার কোটার নামে এলজিবিটিকে প্রোমোট করা হচ্ছে। এটি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
এছাড়া মানববন্ধনে আরো উপস্থিতি ছিলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও চুয়াডাঙ্গা ভলান্টিয়ার্স এর সদস্য ওয়ালিদ ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমানতুল্লাহ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তামিম হাসান, চুয়াডাঙ্গা বাঁধনের সাবেক সভাপতি সজীবুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজর শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন, কে, এম রিফাত ফারুকী, শাকিব আল হাসান, উম্মে মায়মুনা, আরাফাত ইসলাম, সুমন রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ, সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা ভলান্টিয়ার্স আরও পাঁচটি বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এগুলো হলো ডিবেট ক্লাব, আইটি টিম, ব্লাড সেন্টার, বিজনেস প্ল্যাটফর্মসহ আগামীর নেতৃত্ব তৈরির জন্য লিডারশিপ প্রোগ্রাম পরিচালনা।
https://www.jaijaidinbd.com/wholecountry/430247
No comments:
Post a Comment