Wednesday, February 8

মুন্সিগঞ্জে দুই বান্ধবীর বিষপান, নেপথ্যে সমকামিতা!


মুসলিম ধর্মালম্বী সুমি আক্তার ও হিন্দু ধর্মালম্বী লক্ষী দাস পূজা। সম্পর্কে তারা দুই বান্ধবী৷ দু’জনই ফরিদপুরের ভাঙ্গা কেএম কলেজের অনার্সের প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্রী।

দুই বান্ধবী গত ৭ জানুয়ারি ভাঙ্গা থেকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে এসে একইসাথে বিষপান করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমির মৃত্যু হয়। সুমির মৃত্যুর পর শ্রীনগর থানায় এসে তার পরিবার ধর্ষণ ও আত্নহত্যা প্ররোচণার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

পরে পুলিশী তদন্তে দুই বান্ধবীর সমকামিতার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

জানা গেছে, সুমির বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সেরেস্তাবাদ। অপর বান্ধবি পূজার বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলার সোনামুখী এলাকায়। দুইজনের বাড়ি দুই উপজেলায় হলেও সীমানার দুরত্ব খুব কাছাকাছি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তাদের পরিচয়। সপ্তম শ্রেণিতে এসে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। নবম শ্রেণিতে এসে পূজা খেয়াল করে কোন ছেলে বন্ধুর সাথে সুমি কথা বললে তার অসহ্য লাগে। তেমনি পূজার সাথে একদিন কথা না বলে সুমিও থাকতে পারে না।

দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় দুজনই বুঝতে পারে তারা একে অপরের সাথে সমাজ স্বীকৃত নয় এমন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে পূজার পোষাকে পরিবর্তন আসে। সে মেয়েদের পোষাক বাদ দিয়ে ছেলেদের পোষাক পড়া শুরু করে। এ নিয়ে পূজার দরিদ্র পরিবার বকাঝকা শুরু করে। প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পূজা নিজের নামে ২টি সিমকার্ড তুলে সুমিকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দেয়। রাতভর ছেলে ও মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের মতো তাদের সাথে শুরু হয় প্রেমালাপ। পরিবারের কেউ টের পেয়ে যেতে পারে এই ভয়ে অনেক সময় কথা না বলে শুধু টেক্সট আদান-প্রদান চলতো গভীর রাত পর্যন্ত। একসময় পরিবারের কাছে ধরা পরার পর সুমির মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেওয়া হয়।

বেশ কিছুদিন পর পূজা তার ভাই সুজনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে আরেকটি সিমকার্ড তুলে নতুন মোবাইল তুলে দেয়। দু’জনের গলায় গলায় ভাব দেখে এলাকার অনেকেই তাদেরকে হাজব্যান্ড ওয়াইফ বলে টিপ্পনী কাটতো। কলেজ শেষে অনেক সময় দুই বান্ধবী একসাথে পড়ার প্রস্তুতি নিয়ে আলাদা কক্ষে চলে যেত। সেখানেই তারা মাঝে মধ্যে ঘনিষ্ঠ হতো।

এর সূত্র ধরে ২০২০ সালে ২৬ মার্চ সিদুর পরিয়ে সুমিকে বিয়ে করে পূজা। ওই বছরই ২২ আগস্ট থেকে তারা ঘনিষ্ট সম্পর্ক শুরু করে। অনার্সে পড়ার সময় সুমির মোবাইল ফোনের বিষয়টি পরিবার থেকে অনুমতি পায়। প্রায় সময়ই ব্লুটুথে কথা বলতে দেখে সুমির মা ফোন কেড়ে নিলেই দেখতেন সুমি কথা বলছে পূজার সাথে। এই কারণে কোন সন্দেহ বাসা বাধেনি। সমাজের গন্ডি পেরিয়ে দুজন অনেক বার আলাদা হতে চেয়ে না পেরে প্রতিজ্ঞা করে বাঁচলে এক সাথেই বাঁচবে, মরলে এক সাথেই মরবে।

এর মধ্য গত ৭ জানুয়ারি সুমির সাথে তার মায়ের পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সুমি তার মাকে ইট দিয়ে আঘাত করে। পরে পূজাকে ফোন করে তাদের বাসায় আসতে বলে। বিকালের দিকে দুজন অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। মালিগ্রাম এসে ঘাস মারার বিষ কিনে ব্যাগে নেয়। ২শ’ টাকায় বাসের টিকেট কিনে তাতে উঠে বসে।

সন্ধ্যার আগে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার হাঁসাড়া নতুন বাসস্ট্যান্ডে এসে নেমে পরে। সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী আবুল হোসেনের মাছ চাষের পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে। সেখানে সুমি এক সাথে বাঁচা-মরার প্রতিজ্ঞার কথা পূজাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। পরে দু’জনই বিষ পান করে। বিষের যন্ত্রণায় কাতরানোর এক পর্যায়ে স্থানীয়দের চোখে পরলে তাদেরকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। দু’জনেই বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। পরিবারের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দেয়। পরে পরিবারের লোকজন এসে তাদেরকে ঢাকায় নিয়ে যায়। পূজাকে ভর্তি করা হয় ঢাকার মিডফোর্ট হাসপাতালে। সুমিকে প্রথমে ইউনিহেলথ ও পরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১২ জানুয়ারি সুমির মৃত্যু হয়।

পূজা দীর্ঘদিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর চিকিৎসা নিয়ে ২২ জানুয়ারি বাড়িতে ফিরে যায়। ২৫ জানুয়ারি সুমির ভাই এনামুল মোল্লা বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় ধর্ষণ ও আত্নহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। শ্রীনগর থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তে মাঠে নামে।

কল লিস্টের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে পূজার ভাই সুজনের নামে উঠানো সিম দিয়ে সুমির সাথে দীর্ঘ আলাপ ও টেক্সট করার বিষয়টি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুজনকে আটক করে শ্রীনগর থানায় নিয়ে আসে।

সুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পূজাকে সন্দেহের তালিকায় আনে পুলিশ। কিন্তু অসুস্থ পূজা তখনও তেমন কথা বলতে পারে না। পুলিশ সময় নেয়, সুমি ও পূজার বাড়ি থেকে তাদের লেখা দুইটি ডায়েরি উদ্ধার করে। ডায়েরির লেখা দেখে পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত হয়। পরে পূজাকে আটক করে শ্রীনগর থানায় নিয়ে আসলে ঘটনার বিস্তারিত জানায় সে।

এরপর গেল ৯ ফেব্রুয়ারি পূজা মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে তাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. কামরুজ্জামান বলেন, মামলাটি এখনো তদন্তনাধীন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো আসেনি। তিনি জানান, মামলায় অগ্রগতি হয়েছে। দ্রুত চার্জশিট দেয়ার চেষ্টা চলছে।

On January 7, 2022, Sumi Akhtar and Lakshmi Das Pooja, two lesbian girls in Faridpur made a joint suicide attempt by consuming poison. Tragically, Sumi passed away while undergoing treatment. Following Sumi's death, on January 25th, her family filed a case against Lakshmi Pooja Das for abetting suicide at the Srinagar police station. Subsequently, Pooja was arrested and sent to jail custody on February 9th, 2022.The two girls first met in the sixth grade and developed a friendship in the seventh grade. When Sumi's family discovered their relationship, they tried to separate them. However, on March 26th, 2020, Pooja and Sumi secretly married each other in Deora High School, dressed in traditional wedding attire. Defying societal norms, they made a vow to live together if they survived or die together if fate demanded it. Unfortunately, on January 7th, an argument broke out between Sumi and her mother regarding family matters. In the afternoon, the two girls left for an undisclosed destination, where they both consumed poison. Witnessing their suffering, local residents rescued them and rushed them to the Srinagar Upazila Health Complex. Later, Pooja was admitted to Dhaka Midfort Hospital, while Sumi was initially admitted to Unihealth and then transferred to Bangabandhu Medical College Hospital. Tragically, Sumi passed away there on January 12th, 2022.

https://amarbikrampur.com/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0/?fbclid=IwAR1VyS2OjMCdhnO5Jbn52aHLbUWj-BBVrk8vEeDsyeFzcwbCScAbUoo2H9E

No comments:

Post a Comment