‘আমরা নাফ নদীতে বাংলাদেশের জলসীমায় ছিলাম এবং হাত নেড়ে বাংলাদেশের পতাকা দেখিয়ে তাদেরকে গুলি না করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের সংকেত উপেক্ষা করে।’
টেকনাফ থেকে নাফ নদী হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাচ্ছে পর্যটক জাহাজ। ফাইল ফটো
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) গুলিতে বাংলাদেশি দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে শাহ পরীর দ্বীপের তীর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নাফ নদীর মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ার ফারুক মিয়া (৩৭) ও মাঝেরপাড়ার মো. ইসমাইল (১৯)।
তাদের মধ্যে ফারুক দুই পায়ে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
টেকনাফের বিজিবি ব্যাটালিয়ন-২-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, নাফ নদীর মোহনায় বিজিপি তাদের যুদ্ধজাহাজ থেকে বাংলাদেশি জেলেদের ওপর গুলি চালায়।
'আমরা এই ঘটনায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছি,' বলেন তিনি।
ওই মাছ ধরার ট্রলারটিতে থাকা আরেক জেলে মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, তারা সেন্টমার্টিনের কাছে সাগরে মাছ ধরে শাহপরী দ্বীপে ফিরছিলেন। নাইক্ষ্যংদিয়া সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমারের একটি জাহাজ তাদেরকে অতিক্রম করার সময় হঠাৎ সেখান থেকে গুলি চালানো হয়।
ইউসুফ বলেন, 'আমরা নাফ নদীতে বাংলাদেশের জলসীমায় ছিলাম এবং হাত নেড়ে বাংলাদেশের পতাকা দেখিয়ে তাদেরকে গুলি না করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের সংকেত উপেক্ষা করে।'
টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসের ডা. সুরিয়া ইয়াসমিন বলেন, 'আহতদের মধ্যে ইসমাইল সামান্য আহত হয়েছেন। তাকে টেকনাফে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফারুক হাতে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় গুরুতর আহত। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।'
উল্লেখ্য, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) বাংলাদেশি জেলের ওপর গুলি চালানোর ঘটনাটি এমন সময় ঘটল যখন তাদের ২৮৫ সদস্য বিজিবির হেফাজতে রয়েছে। রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন এবং রাখাইন রাজ্যের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩০২ বিজিপি কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুই সেনা সদস্য, ১৮ অভিবাসন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক অর্থাৎ মোট ৩৩০ মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে তারা নিজ দেশে ফিরে যান।
No comments:
Post a Comment