পিরোজপুরের কাউখালীতে ইভটিজিং এর অভিযোগে আসামীকে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সোমবার সকালে উপজেলার জয়কুল গ্রামের আবুল খায়েরের স্ত্রী খুর্শিদা বেগম বাদী হয়ে একই গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মোঃ জিদান হোসেন মিয়াদের (২৫) বিরুদ্ধে কাউখালী থানায় তার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়েকে যৌন হয়রানি ও ইভটিজিং করার অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের সূত্রে কাউখালী থানার এস.আই সৈকত হাসান সানির নেতৃত্বে দুইজন পুলিশ সদস্য অভিযুক্তকে আটক করার জন্য জয়কুল কারিগরী স্কুল এন্ড কলেজের সামনে যায়। সেখান রিপনের দোকানের সামনে থেকে আসামি মিয়াদকে আটক করে। এসময় পুলিশের মটরসাইকেলে মিয়াদ উঠতে না চাইলে পুলিশ তাকে বেধরক লাঠিপেটা করে। পুলিশের এলোপাথাড়ি আঘাতের ফলে মিয়াদ একপর্যায় রাস্তায় পড়ে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মিয়াদের উপর পুলিশের এমন নির্যাতনের প্রতিবাদ জানায়। ঘটনার সময় রাস্তায় শতাধিক লোক প্রতিবাদ করতে জমা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ কাউখালী থানায় ফোন দেয়, এসময় কাউখালী থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মিয়াদের বাবা, চাচাসহ ৩ জন প্রতিবাদকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয়রা গুরুতর অসুস্থ মিয়াদকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অপরদিকে গতকাল এই ঘটনার সূত্র ধরে কাউখালী থানার এস.আই সৈকত হাসান সানী বাদী হয়ে পুলিশের কাজে বাধা, আসামী ছিনতাই, পুলিশের উপরে হামলা নির্যাতনের অভিযোগ এনে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরোও ১৫জনকে বেনামী আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৫, তারিখ-১৮-০৩-২০২৪। এ মামলায় তাবারেক হাওলাদার (৫৮) সিদ্দিকুর রহমান (৫২), আলমগীর হোসেন (৫০), মোসাঃ রাশিদা (২০), মোঃ রিপন (৪৮), ফেরদৌসি আক্তার (২০) নামের ৬ আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ পিরোজপুর আদালতে প্রেরণ করেছে।
এ ব্যাপারে মিয়াদের মা সোনা বিবি জানান, মিয়াদ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, সে যে কোনো মানুষ দেখলে হাসে, ইভটিজিং এর অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো। মামলার বাদীদের সাথে আমাদের জমি জমা নিয়া বিরোধ আছে। পুলিশ আমার ছেলেকে লাঠিপেটা করে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে আমার স্বামী চাকরি করে তাকে গ্রেফতার করেছে এবং আমাদেরকে অবৈধভাবে হয়রানি করতেছে।
উপজেলা বাইশ চেয়ারম্যান মৃদুল আহমেদ সুমন ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে দাবি করেন ।এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবী করেছেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ।
এ ব্যাপারে কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) হুমাউন কবির জানান, ইভটিজিং এর অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলার আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় আনতে চাইলে সংঘবদ্ধ একটি দল পুলিশের উপর হামলা করে আসামীকে নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান পুলিশ কোন মারধর করি নাই। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে ।
No comments:
Post a Comment