জাতীয় সংসদে তৃতীয় লিঙ্গের কোটায় সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশহিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবিদা সুলতানা মিতু। এ উদ্দেশে তিনি দলীয় ফোরামে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবিদা সুলতানা মিতু বলেন, তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়াদেরকে নিয়ে ১৯৯৭ থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ করে আসছি। কাজ করতে গিয়ে সমাজের নানা প্রতিকূলতার মাঝে বহুভাবে লাঞ্ছিত হয়েছি।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে মার্চ মাসের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশন নামে সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন হাতে পাই। যার গভঃ রেজিঃ নং- এস-১১৬৫৫। তারই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি ও সংবিধানে নাম দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আমি লিখিতভাবে আবেদন করি। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে নভেম্বর মাসের ১০ তারিখে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশে হিজড়ারা স্বীকৃতি পায়। এরপর থেকে সমাজে বিভিন্ন জায়গায় আমি প্রতিনিধিত্ব করে তাদের উদ্বুদ্ধ করি যে, ভিক্ষা নয় কর্মই হলো সুন্দর জীবন। তবে সমাজে আমরা এখনও যথেষ্ট বাধাগ্রস্থ হচ্ছি।
মিতু বলেন, ২০১৪ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ১১ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে একটি অফিস উদ্বোদন করে দেন। বর্তমানে এই অফিসে কার্যক্রম চালাচ্ছি।
এছাড়া জামায়াত বিএনপির নৈরাজ্যতার সময়, ৯৬ দিন হরতালের সময় ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এবং শিরীন নাঈম পুনম এর সহযোগিতায় আমি ২৭টি ট্রাক ভাড়া করে হিজড়াদেরকে আমার নেতৃত্বে নিয়ে গুলশানে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ীর সামনে অবস্থান করি। আসার পথে আমাদের বেশ কিছু হিজড়া আহত হয় ককটেল বোমার আঘাতে। নানা প্রতিকূলতার মাঝে এতদূর এসে পৌঁছেছি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি থাকার কারণে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন নারী জাতির গর্ব। নারীদের অবচেতনমন জাগ্রত করার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। সঠিক পথ প্রদর্শক। নারী জাতির উজ্জ্বল কান্ডারী। আমাদের গর্ব। তিনি আসলে মাটি ও মানুষের মা। তৃতীয় লিঙ্গদের স্বীকৃতি ও সংবিধানে নাম লিখে সারা বিশ্বের হিজড়াদের করলেন ঋণী। যতদিন হিজড়ারা এদেশে কোন কর্মকাণ্ড করবে, শেখ হাসিনাকে স্মরণ করতেই হবে। সুতরাং তাদেরকে একটি ছাতার নিচে আনা দরকার। নাহয় এরা অপাত্রে ব্যবহৃত হবে।
ইডেন কলেজ থেকে রসায়নে এম.এস.সি করা আবিদা সুলতানা মিতু বলেন, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে এই সংরক্ষিত আসনটি আশা করছি। প্রধানমন্ত্রী যদি ভালো মনে করেন, আমাকে একবার সুযোগ দেবেন বলে আশা করি। তাহলে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলোকে আরও অনেক ভালোবাসার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে সঠিক পথে আনতে যথেষ্ট চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।
No comments:
Post a Comment