বিআইএইচআর এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ লক্ষিপুর জেলার সদর উপজেলায় যৌন সংখ্যালঘু সমকামী লেসবিয়ান কিশোরীর প্রেম ও বিয়ের ঘটনা প্রকাশের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলার সাথে জড়িত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিতপূর্বক গ্রেফতার করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া অন্তে দায়ীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোড় দাবী জানিয়েছে।
অনলাইন পত্রিকা রাইজিং বিডি ডট কম এ গত ১৬
সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জানা যায় যে, লক্ষ্মীপুরে দুই কিশোরীর ‘সমকামী প্রেম’ নিয়ে
তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ২০২১ সালে বিয়ে করে দেড় বছর ধরে
গোপনে সংসারের তথ্য ফাঁস হলে এলাকাজুড়ে চলছে আলোচনা
সমালোচনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,প্রায় ৫ বছর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে উভয় কিশোরীর পরিবার গভীর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দাখিল পড়ুয়ার মধ্যে আত্মীয়তার পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
২০২১ সালের ৮ জুলাই তারা
ছদ্মনাম ব্যবহার করে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন। এরপর দুইজন দেড় বছর গোপনে
সংসারও করেন। গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পারিবারিকভাবে একজনের বিয়ে ঠিক হয়।
কিন্তু এর আগেই অন্যজন পাত্রের বাড়িতে বিয়ের এফিডেভিট কপি পাঠান। এতে একজনের বিয়ে
ভেঙে যায়। পরে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পারে।
একজন লেসবিয়ান কিশোরী বলেন,‘আমাদের প্রথমে বন্ধুত্ব ও পরে প্রেম হয়। সম্পর্ক চিরস্থায়ী করার জন্য
এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করি।’ এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেন,‘খুবই ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা
হবে।’
বিআইএইচআর এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের মহাসচিব এবং এলজিবিটি অধিকার কর্মী
অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম যৌন সংখ্যালঘু সমকামী লেসবিয়ান কিশোরীদ্বয়ের সমকামী
প্রেম ও বিয়ের ঘটনা প্রকাশ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম মনে করেন যে, যৌন সংখ্যালঘু সমকামী কিশোরীদ্বয়ের
সমকামী প্রেম ও বিয়ের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ হওয়ার এখন কিশোরীদ্বয়ের জীবন নাশের
সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের হোমফোবিক জনগনের হাত থেকে কিশোরীদ্বয় কিভাবে
নিজেদের সুরক্ষিত রেখে সামনের জীবন জাপন করে তাই এখন ভাবনার বিষয় বলে অ্যাডভোকেট
শাহানূর ইসলাম জানিয়েছেন।
একই সাথে যৌন সংখ্যালঘু সমকামী কিশোরীদ্বয়ের যৌন প্রবৃত্তিকে সম্মান দেখিয়ে
তারা যেন তাদের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে সকল প্রকার বৈষম্য, বঞ্চনা, ভয়ভীতি ও
সহিংসতা থেকে মুক্ত থেকে তাদের প্রেম ও দাম্পত্য জীবন চালিয়ে যাতে পারে সেজন্য
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম আহ্বান
জানিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট শাহনূর ইসলাম বিশ্বাস করেন যে, লক্ষিপুরে যৌন
সংখ্যালঘু সমকামী লেসবিয়ান কিশোরীর প্রেম ও বিয়ের ঘটনা বাংলাদেশে কোনো বিচ্ছিন্ন
ঘটনা নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশের আনাচে কানাচে যৌন সংখ্যালঘু সমকামী লেসবিয়ান, গে,
বাই সেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি রয়েছে।
শুধু সামাজিক অগ্রহণযোগ্যতা ও অসহিষ্ণুতা, রাষ্ট্রীয় পীড়ন ও সমকামীতাকে
রাষ্ট্রীয় আইনে অপরাধ হিসেবে গন্য করে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ধারা আজও বিদ্যমান
থাকায় এবং এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে চলমান বৈষম্য,
শারিরীক আঘাত, হুমকি, হত্যার হুমকি, হত্যা, ও অন্যান্য সহিংসতার কারণে শত কষ্টের
মাঝেও তারা লোক চক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে বলে অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম মনে করেন।
সর্বোপরি, বাংলাদেশ দণ্ডবিধিরে ৩৭৭ ধারা বিলোপপূর্বক যৌন সংখ্যালঘু সমকামী
লেসবিয়ান, গে, বাই সেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেণ্ডার ব্যক্তিদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি
প্রদান করে তাদের সুরক্ষার জন্য আইন প্রনয়নের জন্য অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবী জানান।
No comments:
Post a Comment