নারায়নগঞ্জে সিটি কাউন্সেলরের নির্দেশে যৌন সংখ্যালঘু সমকামী হিজরা সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তিকে নির্যাতন ও এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রাইটস (বিআইএইচআর) এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
একই সাথে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত সকল
অপরাধীকে দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার পূর্বক দায়ীদের
দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোড় দাবী জানিয়েছে বিআইএইচআর এবং জাস্টিসমেকার্স
বাংলাদেশ ।
গতকাল ৩০ মে ২০২২
খ্রীষ্টাব্দ সকাল নারায়নগঞ্জ ডট কমে প্রকাশিত খবর আনুযায়ী জানা যায় যে, নারায়ণগঞ্জের বন্দরে টাকা কালেকশন নিয়ে হিজড়া সুমি ও সোহানা
নামে দুইজনকে পিটিয়ে উর্মী নামে এক হিজড়াকে ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেনশাহ নির্দেশে তুলে
নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ৩০মে সকালে বন্দর আমিন আবাসিক এলাকায় এ
ঘটনা ঘটে।
আহত
হিজড়ারা জানায়,তারা এক সপ্তাহ যাবৎ টাকা কালেকশন বন্ধ রাখে। এসময় পার্শ্ববর্তী
হিজড়া মোক্তারের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ আমিন আবাসিক এলাকায় টাকা কালেকশন করে। এ
খবর পেয়ে তারা তিন জন আমিন আবাসিক এলাকায় গেলে তাদের মারধর করে এবং
কাউন্সিলর শাহেনশাহ নির্দেশে প্রায় ৭০/৮০ জন লোক এসে তাদেরকে মারধর করে তাদের
গ্রুপের উর্মীকে কাউন্সিলরের অফিসে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ফোন করে
কাউন্সিলর শাহেনশাহ এর অফিসে মিমাংসা করে উর্মীকে নিয়ে আসতে বলে জানান।
বিআইএইচআর
এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের মহাসচিব এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমকামী অধিকারকর্মী
অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত নারায়ণগঞ্জে সিটি কাউন্সেলরের নির্দেশে দুই হিজরাকে
মারধর ও এক হিজরাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং পুলিশ
কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে অভিযুক্ত অপরাধীদের খুঁজে বের করার আহবান জানিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম মনে করেন যে, উল্লেখিত ঘটনা বাংলাদেশের
কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়,বরং সারা দেশে ট্রান্সজেন্ডার সহ
এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে চলমান বৈষম্য, হত্যা, আঘাত ও
মানবাধিকার লংঘন বিষয়ের একটি অংশ মাত্র।
অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম আরও মনে করেন যে যদিও বাংলাদেশ সরকার
হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সামাজিকভাবে পুনর্বাসনের কিছু উদ্যোগ
নিয়েছে,কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।
তাছাড়া, বাড়ি থেকে সমাজ এবং সমাজ থেকে রাষ্ট্র সর্বত্র হিজড়া
সহ এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত বৈষম্যসহ যেসকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের
সম্মুখীন হচ্ছে সেসবের অধিকাংশ সামাজিক অগ্রহণযোগ্যতা ও অসহিষ্ণুতার কারণে জনসম্মুখের
অগোচরে রয়ে যাচ্ছে বলে অ্যাডভোকেট শাহানুর মনে করেন।
No comments:
Post a Comment