যশোরে যৌন সংখ্যালঘু সমকামী হিজরা সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রাইটস (বিআইএইচআর) এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
একই সাথে যশোরে যৌন সংখ্যালঘু সমকামী হিজড়া ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকল অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক বিচারে সোপর্দ করে দায়ীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোড় দাবী জানিয়েছে বিআইএইচআর এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ।
গত ০৯ জানুয়ারী ২০২২ খ্রীষ্টাব্দ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার প্রকাশিত খবর আনুযায়ী জানা যায় যে, গত ০৮ জানুয়ারী শনিবার সকালে যশোর-ছুটিপুর সড়কের হালসা ব্রিজের কাছে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে লাভলী (৩০) নামে এক হিজড়া খুন হয়েছে।
ব্যাটারি চালিত রিক্সায় কাজে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার হালসা গ্রামের মাঠে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা তাকে বাইক থেকে নামিয়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করলে লাভলী গুরুতর আহত হয়। পরে তার সহকর্মী নাজমা ও সেলিনা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে ভর্তি করার পর বেলা পৌনে ১১ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত লাভলী যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকার আব্দুল করিমের কন্যা। সে শহরতলীর ধর্মতলায় ফারুক হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকত।
স্থানীয় যুবলীগ নেত্রী নাসিমা বেগম জানিয়েছেন, সকাল ৮ টার দিকে ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রামাঞ্চলে বাচ্চা নাচাতে যাওয়ার পথে লাভলী খুন হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের লোকজন নিয়ে গেছে।
বিআইএইচআর এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের মহাসচিব এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমকামী অধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত যশোরে হিজরা হত্যাকাণ্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে লাভলী হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার আহবান জানিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট শাহনূর ইসলাম মনে করেন যে, উল্লেখিত হত্যার ঘটনা বাংলাদেশে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং সারা দেশে ট্রান্সজেন্ডার সহ এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে চলমান বৈষম্য, হত্যা, আঘাত ও মানবাধিকার লংঘন বিষয়ের একটি অংশ মাত্র।
অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম আরও মনে করেন যে যদিও বাংলাদেশ সরকার হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সামাজিকভাবে পুনর্বাসনের কিছু উদ্যোগ নিয়েছে,কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।
তাছাড়া, বাড়ি থেকে সমাজ এবং সমাজ থেকে রাষ্ট্র সর্বত্র হিজড়া সহ এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত বৈষম্যসহ যেসকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্মুখীন হচ্ছে সেসবের অধিকাংশ সামাজিক অগ্রহণযোগ্যতা ও অসহিষ্ণুতার কারণে জনসম্মুখের অগোচরে রয়ে যাচ্ছে বলে অ্যাডভোকেট শাহানুর মনে করেন।
No comments:
Post a Comment