Monday, October 10

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃবাংলাদেশে প্রচলিত আইনে মৃর্ত্যুদণ্ডের বিধান সম্বলিত ধারাসমূহ রদ ও রহিত করার জোড় দাবী জানিয়েছে বিআইএইচআর এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ।

বিশ্ব মৃর্ত্যুদণ্ড বিলোপ দিবস ২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে মৃর্ত্যুদণ্ডের বিধান সম্বলিত সকল ধারা বিলোপের আহবান জানিয়েছেন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হিউম্যান রাইটস (বি আই এইচ আর) এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ। আজ ১০ অক্টোবর ২০২২ খ্রীষ্টাব্দ তারিখে বি আই এইচ আর এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ উক্ত দাবী জানান।





জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ এবং বি আই এইচ আর এর মহাসচিব প্রখ্যাত মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত মৃর্ত্যুদণ্ডের মত নিষ্ঠুর,অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি প্রদান হতে বিরত থেকে গুরুত্বর অপরাধের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন শাস্তি প্রদানের আহবান জানিয়েছে।





অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত বলেন, যদিও বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র মৃর্ত্যুদণ্ডের মত নিষ্ঠুর,অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি বিলোপের পক্ষে তারপরও বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ৪২টি দেশে এখনো মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়ে থাকে এবং অন্যদিকে বিশ্বের প্রায় ৮০% অর্থাৎ১৫৫টি রাষ্ট্র আইনগত ভাবে মৃর্ত্যুদণ্ড সম্পূর্ণরূপে বাতিল করেছে বা বাস্তবিকভাবে মৃর্ত্যুদণ্ড কার্যকর করার উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেছে।


অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম আরো বলেন, বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের চেয়ে মৃর্ত্যুদণ্ড কোনভাবেই কার্যকর নয়। তাছাড়া, মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক সময় নিরপরাধ ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করার ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ কোন বিচার ব্যবস্থাই সম্পূর্ণ নির্ভুলতার সাথে কাজ করে না এবং সে কারণে মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকারের জন্য একটি অগ্রহণযোগ্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।


অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম আরো বলেন, সার্বজনীন মানবাধিকারের মূলে রয়েছে মানুষের জীবন ও মর্যাদার অধিকার। আর মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদানের মাধ্যমে একজন মানুষের জীবনের এই অন্তর্নিহিত মূল্য কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে কেবল শাস্তি হিসাবে সমস্ত মানবাধিকার অস্বীকার করা রাষ্ট্রের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়।



অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২২০ জনের মৃর্ত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে, যেখানে ৩৯জন আসামী পক্ষে ডিফেন্স আইনজীবী ছিল না। তাছাড়া, অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এর বৈশ্বিক প্রতিবেদনে মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগের সময় বাংলাদেশের আদালত কর্তৃক আন্তর্জাতিক বিচারের মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ও বি আই এইচ আর উল্লেখ করে।



সর্বশেষে, অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী সামাজিক ফ্যাক্টরগুলো চিহ্নিতপূর্বক সেগুলো স্বমূলে নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সকল প্রকার গুরুত্বর ও যঘন্য অপরাধ হ্রাস পাবে এবং সেজন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে যাবজ্জীবন কারদণ্ড যতেষ্ট বলে অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম বিশ্বাস করেন।

No comments:

Post a Comment